উন্নয়ন বঞ্চিত তালাসহ জেলার ৮০ভাগ রাস্তা কাঁচা!

Date:

Share:

এসএম নজরুল ইসলাম ,সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক নয়া খবরঃ

তালাসহ সাতক্ষীরা জেলা থেকে সরকার প্রতিবছর হাজার কোটি টাকা চিংড়ি থেকে রাজস্ব পেলেও উন্নয়ন বঞ্চিত তালা উপজেলাসহ সাতক্ষীরা জেলা। সাতক্ষীরা থেকে শ্যমনগর সুন্দরবন পর্যন্ত ৬২ কি. মি. রাস্তায় জনভোগান্তি চরমে। যানবহন চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ। রাস্তায় বড় বড় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। সুন্দরবন পর্যটনকেন্দ্র পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন হলে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। উন্নয়ন বঞ্চিত তালা উপজেলাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ২৩৩টি গ্রামের অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত তালা উপজেলাবাসি। উন্নয়নের ছোয়া থেকে বঞ্চিত সাতক্ষীরা জেলাসহ তালা উপজেলা। উন্নয়ন বঞ্চিত সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলা ৮টি থানা ২টি পৌরসভা। সাতক্ষীরা জেলার আয়তন ৩৮৫৮.৩৩ বর্গ কি.মি. তালা উপজেলার সর্বমোট রাস্তার দশ ভাগের একভাগ রাস্তাও পিচ হয়নি। অধিকাংশ রাস্তা চলাচলের জন্য অনুপযুক্ত। ইটের রাস্তাও কিঞ্চিত পরিমান। বাকি সব কাঁচা রাস্তা। জনভোগান্তির শেষ নেই এ উপজেলার মানুষের। অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের নিকট সাতক্ষীরা জেলা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে তালা উপজেলাসহ সকল উপজেলার মানুষের জনদুর্ভোগ লাঘবে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাভূক্ত করার দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরাবাসি। সাতক্ষীরা জেলাকে সব সময় বঞ্চিত করা হয়েছে। সাতক্ষীরাবাসি সব সময় বৈষম্যের শিকার। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটকরা আসেন। কিন্তু সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। যানবাহন চলাচলের অযোগ্য রাস্তার মধ্যে খাদের সৃষ্টি হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা থেকে সরকার বাগদা চিংড়িতে শত শত কোটি টাকা বচরে রাজস্ব আয় করে থাকেন। কিন্তু এ জেলার উন্নয়নে সরকারের সু-নজর ছিল না কখনও। সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হলে পর্যটকদের অভায়রন্যে পরিণত হবে। সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমান রাজস্ব পাবে। জেলার সর্বমোট রাস্তার চার ভাগের একভাগ রাস্তায়ও পিচ দেওয়া নেই। পিচঢালা রাস্তাতো দূরের কথা ইটের রাস্তাও নেই। তালা উপজেলায় ৯০ভাগ কাঁচারাস্তা। সাতক্ষীরা জেলায় ৮০ভাগ কাঁচা রাস্তা। সাতক্ষীরা জেলার মোট সড়ক ৫৭৮৮ যার দৈর্ঘের পরিমাণ ১১০০২.৪৬ কি:মি: এর মধ্যে পাকারাস্তা ২২৩০’৩১ এবং ২০.২৭% কি:মি:। ৮০% কাঁচারাস্তা। বর্তমানে সংস্কার কাজ চলছে ১৯.২৭ কিলোমিটার সড়কের। তাছাড়া জেলাপ্রশাসক প্রস্তাবিত প্রক্রিয়াধীন দৈর্ঘ্য ৯২৬ কি. মি.। জনসংখ্যার দিক দিয়ে সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের ২৫তম জেলা। কিন্তু পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী ১০৫০ কি: মি: দেখান হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১০৬.৪৬ কোটি টাকার চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ৪১.৪৩ কোটি টাকা; যা মাত্র ৩৯.০৫%। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১১৮.৭৬ কোটি টাকার চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ৪১.১৮ কোটি টাকা; যা মাত্র ৩৪.৬৭%। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ১২৮.৭৬ কোটি টাকার চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ৪৪.১২ কোটি টাকা; যা মাত্র ৩৪.২৭%। ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে ১৪৩.৯৭ কোটি টাকার চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ৪০.৫১ কোটি টাকা; যা মাত্র ২৮.১৪%। প্রতি বছর শ্যামনগর পদ্মপুকুর, গাবুরা, প্রতাপনগর জলোচ্ছ্বাস ঘুর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্রীড়া কমপ্লেক্স, চিংড়ি মাছ রক্ষণানবেক্ষণে হিমাগার, ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র কিছুই নেই এ জেলায়। সাগরের ও নদীর বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। তালাসহ সাতক্ষীরা জেলা থেকে বাগদাচিংড়ি, গলদা চিংড়ি, হিমসাগর আম, সুন্দরবনের মধু রপ্তানি করে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার বছরে রাজস্ব পায়। সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়ন হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। লেখক: সভাপতি, তালা প্রেসক্লাব, সাতক্ষীরা